এতো টাকা দিয়ে ব্র্যান্ডের দামি ঘড়ি কেনার সামর্থ্য তাঁর নেই

সেতুমন্ত্রীর দামি ঘড়ি প্রসঙ্গে ভয়েস ওএস আমেরিকার প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, এতো টাকা দিয়ে ব্র্যান্ডের দামি ঘড়ি কেনার সামর্থ্য আমার নেই। বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাক্সক্ষীরা গিফট দেন। এগুলো কেনার সাধ্যও আমার নেই আর মনেও পড়ে না কিনেছি বলে। ইউনিভার্সিটি লাইফে একবার একটা ঘড়ি কিনেছিলাম। তারপরে আর কেনার ইতিহাস নেই। গিফট আইটেম কোনটা ভালো কোনটা মন্দ, সেটা আমি দেখি না। যখন যেটা ভালো লাগে, তখন সেটা পরি।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ও আমাদের অর্জন সম্পর্কে বলতে চাই, আমার দায়িত্ব, আমার কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করা, এটা হলো বড় কথা। ৭৫ পরবর্তীতে দেশনেত্রী শেখ হাসিনা কাউন্সিলে দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন ৮১ সালে। সেই থেকে আমাদের সত্যিকারের যাত্রা শুরু হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের বিচার করেছি। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার করেছি। শেখ হাসিনা না থাকলে এই কাজগুলো আর কারো পক্ষে করা সম্ভব ছিলো না। কিন্তু শেখ হাসিনার এই চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না। বার বার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তাকে লক্ষ্য করেই গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিলো। নানান চড়াই উৎরাই অতিক্রম করে আমাদের পথ চলতে হচ্ছে, ক্ষমতায় আসতে হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম দফায় আমরা ৫ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। এরপর ৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। বিএনপির ৫ বছর আর ২ বছর ইমার্জেন্সি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে অস্বাভাবিক সরকার। ওই সরকার মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে চেয়েছিলো। প্রথমেই বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুলি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। অনেকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ বলতে চান। কিন্তু ২০০৮ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনের কোথাও কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি বা প্রশ্ন আমরা কোথাও শুনিনি। দেশে বিদেশে কেউ ওই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেনি। সেই নির্বাচনে বিএনপি সিট পেয়েছিলো ২৯টি। পরবর্তীতে আরেকটি যুক্ত হয়ে ৩০টি। তো বিএনপির ৫ বছরের কথা সবাই জানে।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর দল আরো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আরো শক্তিশালী হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে কিছু কলহ বিবাদ আছে। ক্ষমতাসীন দলের অন্তর্কোন্দল। এ থেকে আমরা মুক্ত থাকতে পারিনি। তারপরও আমি বলতে পারি, যে কোনো রাজনৈতিক দলের তুলনায় আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ। অনেক শক্তিশালী, অনেক সুসংগঠিত। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল, যে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র আছে। গণতন্ত্রের চর্চা আছে। দুমাস অন্তর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হয়। প্রতি মাসে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা হয়। ছয় মাস অন্তর আমরা বর্ধিত সভা করি। আমাদের উপদেষ্টা পরিষদ আছে।
জাতীয় কমিটি আছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সবার মিটিং হয়। আমাদের সম্মেলন আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় করি। জাতীয় সম্মেলনেও প্রস্তাব ও সমর্থন আসে কাউন্সিলরদের মধ্যথেকে। কোনো পদে প্রার্থী না থাকলে সরাসরি নির্বাচিত। কিন্তু প্রার্থী একাধিক হলে ভোট হবে। এভাবে জেলা উপজেলায় আমরা ইন্টার-পার্টি ডেমোক্রেসি চর্চা করি।