https://www.bartomansylhet.com/

5689

sylhet

প্রকাশিত

১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:২০

বিশ্বনাথ মুক্ত দিবস

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: ১০ ডিসেম্বর। আজ মঙ্গলবার বিশ্বনাথ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো এ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্থানী হায়েনা ও তাদের এদেশীয় দোসরদের পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এর মাধ্যমে পাক হানাদার মুক্ত হয় সিলেটের ঐতিহ্যবাহী জনপদ ও প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলা। এরপর থেকে ১০ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর কুরুয়া, তাজপুর, দয়ামীর, নাজিরবাজার, রশিদপুর শক্রমুক্ত করে এসে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন তৎকালীন বিশ্বনাথ থানার ওসি আবুল হোসেন ও দারোগা আলী আহমদ এবং স্থানীয় রাজাকাররা স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করতে দিচ্ছে না। এই সংবাদে উত্তেজিত হয়ে ৫নং সেক্টরের কোম্পানী কমান্ডার আব্দুন নূরের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা সরাসরি উপজেলা সদরে পৌঁছে তাদের আত্মসমর্পণে করতে বাধ্য করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জোরালো ভ‚মিকার কারণে এসময় স্থানীয় রাজাকাররা পালিয়ে গেলে থানা পুলিশ আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। আত্মসমর্পণের ঘটনায় রাত হয়ে যাওয়ায় ওই দিন আর বিজয় পতাকা উত্তোলন করা হয়নি।
এরপর ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় বিশ্বনাথ থানা সদরের রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশ করে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিশ্বনাথকে শক্র মুক্ত ঘোষণা করেন ৫নং সেক্টরের কোম্পানী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর।
এ সময় বিশ্বনাথ পৌর শহরের উত্তর মিরেরচর গ্রামের আব্দুল মুতলিব বিএসসিকে থানা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগান দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ যোগ দেন। পতাকা উত্তোলনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে বিলম্ব হওয়ায় পরদিন আবার বিজয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তাই ১১ ডিসেম্বর দৌলতপুর গ্রামের মরহুম আব্দুর রব চৌধুরী ওরফে সমুজ মিয়ার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিজয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ৫নং সেক্টরের কোম্পানী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুন নূর। 
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন একই সেক্টরের ল্যান্সনায়ক গোলাম মোস্তফা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মরমী কবি হাছন রাজার দৌহিত্র ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম দেওয়ান তৈমুর রাজা চৌধুরীর পুত্র দেওয়ান সমশের রাজা চৌধুরী, থানা প্রশাসক মরহুম আব্দুুল মুতলিব বিএসসি, মিরেরচর গ্রামের মরহুম আব্দুল মন্নান মনাফ, চান্দসিরকাপন গ্রামের মরহুম ইসকন্দর আলী সারং, মরহুম কয়েস চৌধুরী, বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়াররম্যান ও মুফতিরগাঁও গ্রামের আকমল আলী, ধর্মদা গ্রামের তজম্মুল আলী, নোয়াগাঁও গ্রামের মরহুম আছলম খান, রাজনগর গ্রামের একরাম মিয়া, নরসিংপুর গ্রামের মরহুম আইন উল্লাহ প্রমুখ।
এরপর থেকে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বরকে ‘বিশ্বনাথ মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।